মায়ের আত্মহত্যা সত্য ঘটনা Ghost Fm
মায়ের আত্মহত্যা সত্য ঘটনা Ghost Fm
আমার মা যখন আত্মহত্যা করে তখন আমার বয়স ১৪ বছর। অনেককিছুই বুঝি আমি৷
আমার বাবা আমার মায়ের বোনকে একদিন সকাল বেলা বিয়ে করে নিয়ে আসেন।
মা তখন তরকারি কাটতেছিলো।
বাবা আর খালামণি একসাথে ঘরে ঢুকেছিলো। তখন আমার খালামণি বোরকা পড়ায় অবস্থায় ছিলো।
আমার মা খালামণিকে জিজ্ঞেস করেছিলো কি রে তুই আমার বাসায় কেন।
তখন বাবা বলে হিতিরে আইজকা আমি বিয়া করছি। এজন্য সোহাগী আমার ঘরে আইছে।
আম্মা -- মানে কি তুমি ওরে বিয়ে করছো।
এই সোহাগী কথা বল বোন হয়ে কিভাবে বোনের ঘর নষ্ট করলি। কেমনে পারলি আমার ছোট ছোট ২ টা বাচ্চার কথা ভাবলি না।
আমার খালা তখন চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে।
আমার মা কান্না করে চিৎকার করে আশেপাশের বাড়ির মানুষদের ডাকে।
আর দা হাতে নিয়ে বাবাকে বলে হারামির বাচ্চা কত জালিয়েছিস তারপরে ও তোর সংসারে ছিলাম শেষ পযন্ত তুই আমার সাথে এমন বেইমানি করলি।
আর সোহাগী তুই আমার বোন হয়ে আমার সাথে এমন করার মানে টা কি ।
আমার খালা চুপচাপ ছিলো।
মনে হয় তিনি এসবের জন্য একদম তৈরি হয়ে এসেছেন।
আশেপাশের বাড়ির মানুষ গুলো ছি ছি করতে লাগলো।
আমার বাবা দমকিয়ে সবাইকে চলে যেতে বললও।
তাদের বললও কেন আইছেন নাটক দেখতে নি যান ঘরে যান।
তারপর বাবা একটা রুমে আমার খালাকে নিয়ে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দিলো।
আমার মা যেন বিষয় টা হজম করতে পারলো না।
আমার মা আমাকে বললও তাড়াতাড়ি নানার বাড়িতে যেতে আর নানীকে ডেকে নিয়ে আসতে৷
আমি নানার বাড়িতে খালি পায়ে বিলের মধ্যে দৌড়ে দৌড়ে যায়।
আমার নানু বুড়ো মানুষ খুব অসুস্থ ছিলো। তার মধ্যে আমার একটাই মামা প্রতিবন্ধী ছিলো।
নানু কোন রকম আমার সাথে মামাকে বাড়িতে রেখে আসে৷
এসে দেখে এ অবস্থা । নানি কি করবে বুঝতে পারে না।
নানু অনেক রুমের দরজায় বাড়িয়ে দিয়েছে দরজা ভাঙার অবস্থা কিন্তুু বাবা বা খালা কেউ দরজার খুলে না।
নানুকে কান্না করতেছে আম্মারে জড়িয়ে ধরে। আর সোহাগীরে চিল্লায় বলে তোর উপর গজব পড়বে তুই কেমনে সংসার টা ভাঙলি তোর বিচার হবে।
তুই আমার ১ নাতিন আর ১ নাতির বাপরে কেমনে কইরা লইছোস।আল্লা গো তুমি কোনহানে।
সাপের বাচ্চা পেটে লইছি। সাপের বাচ্চা হইবো জানলে মেরে ফেলতাম।
সারাদিন ঘরে কোন রান্না হয়নি৷
আমারে আর ভাইরে পাশের বাড়ির এক কাকি ডেকে নিয়ে গিয়ে ভাত খাওয়াইছে।
মা সারাদিন উপোসই ছিলো। নানী মাগরিব এর আযানের সময় চলে যায়।
কারণ ঘরে প্রতিবন্ধী মামা। তারে দেখা কেউ নাই।
আমার ছোট ৬ বছরের ভাইরে নানু সাথে করে নিয়ে যায়৷
আর আমারে বলে যেনো মারে দেখে রাখি।
রাত ৯ টার দিক বাবা দরজা খুলেছে।
দরজা খুলে বাহিরের থেকে তালা দিয়ে কোথায় যেন যেতে দেখলাম।
বাবা বাহির হওয়ার পর মা খালারে দরজার এ পাশ থেকে বলে কেমনে পারলি।
নিজের জামাইর ভাত খেতে পারোস নাই তাই বলে আমার সংসার ভাঙলি।
অনেক গালি ও দিলো মা। কিন্তুু খালা একদম চুপ হয়ে থাকলো।
৩০ মিনিট পর বাবা আসলো হাতে খাবারের প্যাকেট।
তারপর রুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিলো।
রাত ১০ টার দিকে বাবা মায়ের কাছে এসে বললও দেখো আমি কোন ঝামেলা চাই না ।
তোমরা ২ বোন মিলামিইশা থাইকো।
মা তখন বাপের জামার কলার ধরে বলে জানোয়ার এর বাচ্চা জানোয়ার তুই কি মনে করছোস।
আমার সব কিছুর জন্য তুই দায়ী এমনকি আমার মরণের জন্য৷।
তখন বাবা মায়ের গায়ে হাত তুলে আর বলে তোর মধ্যে কি আছে কিছু নাই৷
কিছু পাই না সেজন্য বিয়ে করছি৷
তোর মতো মোটা বেডিরে ভালো লাগে না হেরলাইগা চিকন দেইখা বিয়া করছি৷
এটা বলে বাবা রুমে ঢুকে যায়।
আর মা বসে বসে কাঁদে ।
আমাদের ঘরে ঝামেলা অনেক আগে থেকে। মা আর বাবার মধ্যে মিল ছিলো না।
আমার ছোট খালার ডিভোর্স হয় ৩ বছর আগে।
এর পর আরেকটা বিয়ে হয় কিন্তুু সংসার করতে পারে নি।
আমার বাবার সাথে ছোটখালার অনেক ভাব ছিলো। প্রায় সময় আমাদের বাড়িতে এসে এসে থাকতো।
আমার বাবা আর খালার মধ্যে এই রঙ লিলা মা বুঝতে পারে খালাকে অনেক শাসায় কিন্তুু খালা কথা শুনে না।
নানিরে জানাই মা। এমনি খালারে আমাদের বাড়িতে আসতে নিষেধ করে।
আমার বাবার সাথে এসব নিয়ে মার অনেক ঝামেলা হয়।
আর মারে বাবা অনেক মারতো।
কিন্তুু তারা যে বিয়ে করে ফেলবে মা এটা কল্পনা ও করতে পারে নি।
সেই রাতে আমার আর ঘুম আসলো না৷ নিজের খালা কিভাবে এ কাজটা করতে পারলো। বাহিরের কোন মানুষ হলে মেনে নিতে পারতাম।
ফজরের আযানের আগে একটু ঘুম আসলো৷
আমি ঘুমিয়ে গেলাম।
ঘুম ভাঙলো আমার সকাল ৮ টা বাজে।
দেখলাম মা পাশে নাই৷
আমি ঘুম থেকে উঠে বাথরুমে গেলাম।
বাথরুম থেকে এসে পাশের রুমের দিকে গেলাম দেখলাম দরজা বন্ধ৷
জানালা খোলা ছিলো। হঠাৎ জানালার দিকে চোখে যেতেই দেখলাম মা ঝুলে আছে।
হায় আল্লাহ আমি চিৎকার করে মা বলে উঠলাম৷
পাশের বাড়ির মানুষ দের ডেকে আনলাম।
তারা সবাই এসে দরজা ভাঙতে লাগলো।
বাবা রুম থেকে বের হয়৷
তখন পাশের বাড়ির কয়েকটা চাচা মিলে বাবাকে মাইর দেয়।
আর আমি গিয়ে আমার খালার চুল ধরে বলি খানকি দেখ দেখ আমার মা মরি গেছে এখন শান্তি হয়ছোস।
মার লাশ নামানো হয়।
মার জিবাহ মুখের বাহিরে এসে পড়ে থাকে।
নানি আসে সাথে আমার প্রতিবন্ধী মামা ও৷
আমার মামা বু..... বু....বু বলে কান্না করে।
মুখের লোল সব মায়ের গায়ে পড়ছিলো মামার।
আমি তো কাঁদতে কাঁদতে আকাশ বাতাস সব এক ফেলছি।
এরমধ্যে বাবা মাইর টাইর খেয়ে খালাকে নিয়ে পিছনের দরজা দিয়ে চুপি চুপি পালিয়ে গেলো।
পুলিশ আসলো ময়নাতদন্তের জন্য মায়ের লাশ নিয়ে গেলো।
বিকেলে মায়ের লাশ দিয়ে গেলো।
আমার মায়ের জানাযা হলো।।
জঙ্গলের এক পাশে মায়ের কবর দেওয়া হলো।
সেই করুণ ভয়ংকর দিনের কথা কখনও ভুলবো না।
সবাই আমাদের দেখতে এলো আমাদের জন্য অনেক আফসোস করলো।
সে রাতে অনেক আত্মীয় স্বজন সহ নানু মামা আমাদের সাথে ছিলো৷
সবাই বুঝালো মন শক্ত করার জন্য৷।
মায়ের মৃত্যুর চার দিন পার হলো কোন রকম সবাই মিলে মিলাদ এর আয়োজন করলো।
এর পর সবাই চলে যায় যে যার মত৷
শুধু নানু আর মামা ছিলো।
তখন আমাদের ঘরে তালা মেরে মায়ের গহনা ঘাটি নিয়ে নানুর বাসায় চলে আসি।
বাবা নামক পশুর টার কোন খোঁজ খবর পেলাম না৷
আমার মায়ের এমন এক স্বামী ছিলো আমার মায়ের মৃত্যুর পর একটু কবর ও জুটলো না৷
নানু আর আমি বাবার বিরুদ্ধে বাদী হয়ে মামলা করলাম।
চলবে............
মায়ের_আত্মহত্যা
#পর্ব_০১
Nusrat Haq....
সত্য ঘটনা অবলম্বন
No comments