অতৃপ্ত কবর | Vuter Golpo | Bhuter Golpo | ভূতের গল্প
অতৃপ্ত কবর | Vuter Golpo | Bhuter Golpo | ভূতের গল্প
প্রত্যেক মাসের ১৪ তারিখে ওই কবরটায় মাঝ রাতে কেউ এসে ফুল রেখে যায় আর কাঁন্না করে।অদ্ভুত মায়াবী সে সুর।বিয়ের পর থেকেই আমি এটা লক্ষ্য করছি।
এটা কতদিন ধরে হয়ে আসছে আমার জানা নেই।আমি প্রথম ওই ঘটনা দেখি যেদিন আমার প্রথম বিয়ে হয়।আমি আমার স্বামীর সাথে বাসর রাতে একসাথে চাঁদ দেখার আবদার জানায়।
ছাদে গিয়ে হটাত ই খেয়াল করি অনেক দূর থেকে সাদা কাফন জড়িয়ে কোনো মহিলা হেটে আসছে আর ঐ কবরে ফুল দিচ্ছে।গভীর রাতে হুহু গম্ভীর কন্ঠে কান্না শব্দে আমি ভয়ে আমার স্বামী কে জড়িয়ে ধরি।
কিন্তু ও ভয় পাবে বলে আমি কিছুই বলি না ওকে।১ মিনিট পর চেয়ে দেখি ওখানে কিছুই নেই।আমি প্রচন্ড ভয় পেয়ে যাই এখনি যাকে দেখলাম সে কোথায় গেলো।
আমি পরের দিন জানালা দিয়ে দেখার চেষ্টা করি।কিন্তু পরেরদিন কাউকে দেখি না।আমি তারপর আর কোনদিন সেই দৃশ্য দেখি নি।এরপর হটাত একদিন আমি আবার দেখি ঐ দৃশ্য।
আজ প্রায় এক মাস পরে আমি সেই দৃশ্য দেখলাম।প্রায় এক মাস বলা ভুল আমি হিসাব করে দেখলাম গত মাসের ১৪ তারিখ আমার বিয়ে হয়েছিলো আজ ও ১৪ তারিখ আজ আবার সেই সাদা শাড়ি পড়া মহিলা কে দেখলাম।তাহলে কি ও শুধু ১৪ তারিখেই আসে।
আমার নাম প্রিতী। আমার বান্ধবীর দেবরের সাথে আমার বিয়ে হয়েছে।আমার সাহসিকতার জন্য আমার বান্ধবী তার দেবরের সাথে আমার বিয়ে দেই।কারণ ভূত প্রেত আত্মা নিয়ে আমার পাড়ালেখা করা।অনেক বার এসব সমস্যা আমি সমাধান করেছি।
বিয়ের পর ই এ বাড়িতে নানা গুজব শুনে চলেছি।কিন্তু আমি কখনো তেমন কিছু পাই নি।
আমার বান্ধবীর নাম তিসা।
গত এক বছরে এ বাড়িতে নাকি খারাপ আত্মার প্রভাব পড়েছে। কেউ নিশী রাতে এ বাড়ি পাহারা দেই।
সন্ধার পর ই এ বাড়ির বিদ্যুৎ চলে যায়।রাত ১১ টার পর ঝুম ঝুম শব্দে করে কেউ ঘুরে বেড়ায়।কিন্ত কাউকে দেখা যায় না।শুধু অনুভব করা যায় তাকে।
বাড়ির ছাদের আমগাছে নাকি পা ঝুলিয়ে বসে থাকে অশরী।তার শাড়ির সাদা থান নাকি ঝুলে পড়ে মাটিতে।
রুমের মাঝে কোন এক বাচ্চা নাকি নূপুরের ঝন ঝন শব্দে হেসে খেলে বেড়ায়।
আমি ঘুমিয়ে আছি একদিন।বাইরে দেখি একটি বাচ্চার শব্দ।আমি রুম থেকে বেরিয়ে আসি।দেখি ফুটফুটে একটি মেয়ে পুতুল নিয়ে খেলছে।
আমাকে বলছে কাকি আমার সাথে খেলবে। আমার না একা একা ভাল লাগে না। আমি বললাম কেনো মা।তুমি একা কেনো।
মেয়েটি আমাকে বলে আমার এই পুতুল টি আমার সঙ্গী।তুমি খেলবে আমার সাত্থে।আমি বললাম হ্যা খেলবো।
খেলতে খেলতে এক সময় খুব জোরে কেঁদে দিলো ও আমি বললাম কি হয়েছে তোমার ও বলে আমার খুব কষ্ট।বলতে বলতেই আমার ঘুম ভেঙে যায়।
ঘুম ভাঙার সাথেই শুনি তিসার চিৎকার।
আমি ছুটে গেলাম তিসার কাছে।
একটি পুতুল নাকি হাওয়ায় উড়ছিলো।পুতুল টি নাচছিলো গান গাইছিলো।অন্ধকার রুমে পুতুল টি নাকি জ্বলজ্বল করছিলো।
কিছু সময় আগে নিজেই তো একটি পুতুল স্বপ্ন দেখলাম। এটা সেই পুতুল নাতো।
পরেরদিন স্টোর রুম ঝাড় দিতে গিয়ে দেখি সেই পুতুলটা।যেটা গতরাতে আমি স্বপ্ন দেখেছিলাম।
বাহ!কি সুন্দর পুতুল টা।এই স্টোর রুম টা এত নোংরা কিন্তু পুতুল টার গায়ে কোনো ধুলো নেই।মনে হচ্ছে যেন রোজ কেউ পুতুলটার যত্ন নেই।
পুতুল টা কার আমার এটা খুব জানতে ইচ্ছে করে।তাই বাড়ির সবাই কে ডেকে পুতুল টার কথা জানতে চাই যে এ পুতুল টা কার।বাড়ির সবাই যেন ভূত দেখেছে এমন ভাবে চেয়ে থাকে।
তিসা সাথে সাথেই পুতুল টা আমার হাত থেকে কেড়ে নিয়ে স্টোর রুমে ফেলে দেই।আর কান্নায় ভেঙে পড়ে।আমাকে বলে এ পুতুল নিয়ে একটা কথাও আর বলবি না।
আমি তিসা কে এত এক্সাইটেড হতে দেখে আর কিছু বললাম না।আজ আবার ১৪ তারিখ আমি জানালা খুলে তাকিয়ে আছি।আজ আর ঘুমালাম না।।
আজ ও সেই সাদা শাড়ির মহিলা কবরের পাশে দাড়িয়ে আছে।
এদিকে হটাত ই স্টোর রুম খোলার শব্দ পেয়ে উকি মেরে দেখি স্টোর রুম টা নিজ থেকে খুলে গেছে আর পুতুল টা নিজে নিজে চলছে।।
জ
পর্বঃ২
———————————————————
মাজ রাতে দরজা খোলার শব্দ পেয়ে আমি বাইরে এলাম।নিশী রাত চারদিক অন্ধকার আর ঝি ঝি পোকার ডাক।
—আমি দরজা টা হালকা খুলে দেখি পুতুল টা স্টোর রুম থেকে বেরোচ্ছে।পুতুল টার চোখ দুটো জ্বলজ্বল করছে।
পুতুল টা বারান্দা দিয়ে একা একা যাচ্ছিলো।ভয়ে আমার শরীর হীম হয়ে আসছিলো।যে কেউ মাঝ রাতে এমন দৃশ্য দেখলে ভয়ে হার্টফেইল হতো।
—আমার ভয় লাগলেও আমি পুতুল টাকে ফলো করি বিষয় টা বোঝার জন্য।পুতুল টাকে কেউ ডাকছিলো আয় টুসি আয়।আমার কাছে আয় টুসি।
মা বাবা কেউ থাকে না আমার সাথে টুসি।শুধু তুই আছিস আমার খেলার সাথি টুসি।আমি দেখতে পাই বারান্দার খানিক টা দূরে একটা পাঁচ বছরের বাচ্চা মেয়ে দাঁড়িয়ে অন্ধকারে তার চেহারা বোঝা যাচ্ছে না ছোট একটা বাচ্চা সেটা বোঝা যাচ্ছে।
—পুরা বারান্দা জুড়ে সে আর পুতুল টা হাসছে আর খেলছে।এর ই মাঝে বাইরের কবর টা থেকে খুবই মায়াবী কান্নার আওয়াজ আসছে।
বাইরে পুতুল খেলছে আবার অন্যদিকে কবর টার কাছে কেউ একজন দাড়িয়ে সাদা থান পরে।
ওই কান্নার আওয়াজ সবাই শুনতে পাই।কিন্তু কেউ ওই কান্নার কারণ বোঝে না।আমি আজ ওই কবর টা দেখেই যাচ্ছি কোথায় যায় ওই মহিলা আমাকে দেখতেই হবে।
কিছু সময় পরে ওই বাচ্চা আর পুতুল টা ওই কবরের কাছে যায় মিনিটের মাঝেই ওরা হাওয়া হয়ে যায়।আমি আজ ও কিছুই বুঝতে পারলাম না।নিরুপায় হয়ে আমার স্বামির পাশে শুয়ে পড়ি।
পরের দিন ঘুম থেকে উঠে যা শুনি আমার শরীর হীম হয়ে যায়।
আমার বান্ধবী তিসা শুয়ে আছে মাঝ রাতে দেখে ওর রুমে দোলনায় দোল খাচ্ছে সাদা থান পরা কোনো মহিলা।তিসা ওই মহিলার দিকে তাকাতেই ওই মহিলা এমন ভাবে হাসি দেই তিসা ঘুম এর মাঝে বেহুশ হয়ে যায়।
আমার ভাসুর মানে তিসার স্বামি কাউকে না ডেকেই তিসাকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে যাওয়ার পরিকল্পনা করে।ভয় পেয়ে তিসার নাক আর গলা দিয়ে রক্ত বেরিয়ে ফ্লোর ভিজে যাচ্ছিলো।
ওই মুহুর্তে তিসার ব্লাড বন্ধ করতে না পারলে তিসা কে আর বাঁচানো যাবে না তাই আমার ভাসুর কাউকে কিছু না জানিয়েই ওকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাচ্ছিলেন।মাঝ রাস্তায় গিয়ে দেখে তিসার পাশে আমার ভাসুর নেই সেই মহিলা।
তিসাকে বলছে আমার সাথে চল ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাবো।তিসা নিজের পাশে ওই বিভৎস মহিলা কে দেখে খুব জোরে চিৎকার করছিলো।
মায়াবী রাতের আঁধারে চারদিক থম থম আশে পাশে কেউ নেই।আমাকে ছেড়ে দাও বলে চিৎকার করছিলো তিসা। তখন ই আমার স্বামি আমার ভাসুর তিসাকে বাঁচায়।আর ওরাই তিসাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যায়।
আসলে তিসার অসুস্হতা দেখে আমার ভাসুর আমার স্বামিকে ডাকতে আসছিলেন তিসাকে ডাক্তারের কাছে নেওয়ার জন্য।কিন্তু ওরা গিয়ে আর তিসা কে রুমে পায় না।রুম থেকে রক্তের ফোটা বাইরে যেতে দেখে ওরা।
মানে মেঝে দিয়ে রক্তের দাগ।ওই দাগ ফলো করতে করতে আমার স্বামি আর আমার ভাসুর যান।গিয়েই রাস্তায় তিসাকে পাই আর তিসার কান্না আর চিৎকার শুনতে পায়।আসলে ওই ভয়ংকর মহিলাটা আমার ভাসুরের রূপ নিয়ে তিসাকে ডাক্তারের নাম করে বাইরে নিয়ে যায়।
ওর উদ্দেশ্য তিসাকে অন্ধকারে একা নিয়ে হয়তো ভয় দেখিয়ে মেরে ফেলার।তিসা আজ হসপিটালে ভর্তি আছে।অনেক অসুস্থ সে।তিসার এ অসুস্থতার কথা শুনে তিসার মা বাবা এ বাড়িতে আসে।
তিসার এ ভয়ংকর অবস্থা দেখে তিসার মা বাবা খুব ই কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন মেয়ের এ অবস্হা দেখে।যতই হোক একটা মাত্র মেয়ে তো।
অবশ্য তিসার আরেক টা বোন আছে তবে তার খোজ খবর কেউ নেই না।আমি তিসার মা বাবার কাছে জানতে চাই ছোট বেলায় কি তিসার কোনো জ্বীন ধরেছিলো। তা উনারা বলেন না।
আমি আবারো উনাদের বলি তাহলে তিসার উপর এমন আত্মার প্রভাব কেনো পড়েছে।তিসার বাবা বলেন সেটাই বুঝতেছিনা মা।
হটাত ই তিসার মা বলে ওঠেন ওই কাল নাগিনী যেদিন থেকে আমাদের নাক মুখ কেটে পালিয়ে গেছে সেদিন থেকেই আমার মেয়েটার জীবন অভিশপ্ত হয়ে উঠেছে।
পর্বঃ৩
—————————————
মাঝরাতে হাওয়ায় ভাসা দোলনায় সাদা কাপড় পরে কাউকে দোল খেতে দেখলে যে কোনো মানুষ এর ই স্টোক হবে।
দোলনায় দোল খেতে খেতে হুহু করে কেঁদে উঠে রাত কে আরো বেশি ভয়ংকর করে তোলে সেই মায়াবী সুরে।
তিশার মা বাবা কাকে কালনাগিন বলছে সেটা বুঝতে পারছি না।উনাদের যা মনের অবস্হা আমি যে এই মুহুর্তে কিছু প্রশ্ন করবো সেই পরিস্হিতিও নেই।
উনাদের চোখে মুখে যতটা কষ্ট দেখছি ততটাই রাগ আর ঘৃণা দেখতে পাচ্ছি।আজ রাতে ফ্রি হয়ে আন্টি আর আঙ্কেল এর কাছে জানতে চাইবো কোন কাল নাগিনী আপনাদের নাক মুখ কেটে গেছে তিশার অবস্হার জন্য তাকে দায়ী করছেন কেন?
যারা গ্রুপে পর্ব খুজে পান না তারা আইডি তে রিকুয়েষ্ট দিতে পারেন।
তিসা মোটামুটি সুস্থ। আজ আমার ভাসুর তিসাকে বাড়ি নিয়ে এসছে।
তিসার অনেকবার মিসক্যারেজ হয়েছে।হাজার চেষ্টার পরেও তিসার বাচ্চা হচ্ছে না।যতবার ই ও প্রেগন্যান্ট হয় ততবার ই কোন না কোন ভাবে ওর বাচ্চা নষ্ট হয়ে যায়।ডাক্তার রা এর কোনো সমাধান পান নি।
তবে এখন সবাই অনুমান করতে পারে যে এ বাড়ির ভৌতিক সমস্যার জন্য তিসার বাচ্চা হচ্ছে না।আজ রাতে তিসার রুমেই যাচ্ছিলাম আমি রুমে ঢোকার আগে বাইরে থেকে শুনি তিসদ্র মা বাবা তিসার সাথে কথা বলছে।
তিসার মা বলছে কেনো যে তোকে এ বাড়িতে বিয়ে দিয়েছিলাম।জামাই এর কথা সেদিন শোনাটাই ভুল হয়েছে।ওই সর্বনাশি কোনো আত্মা এ বাড়িতে চালান করেছে তা না হলে আজ তোর এ অবস্হা হতো নারে মা।
আমার বুঝতে বাকি রইলো না যে তিসার মা বাবা তিসার স্বামির আগের স্ত্রীর কথা বলছে।তিসার স্বামি আগে বিবাহিত ছিলো।তার একটা বউ ও ছিলো এটা আমি আশ পাশ থেকেই শুনেছি।
আমার ভাসুরের আগের স্ত্রী সম্পর্কে কিছুই জানিনা আমি।গ্রামে থাকলে হয়তো সব কিছুই জানতে পারতাম।সব কিছু কেমন যেন ঘোলাটে আমার কাছে।
আমার ভাসুরের দ্বিতীয় স্ত্রী সম্পর্কে আমার জানতে ইচ্ছা হলো।কি তার পরিচয় আর সে বা কোথায় চলে গেছে।আমি আজ আমার স্বামিকে গিয়ে প্রশ্ন করলাম একটা কথা বলবো।উনি বললেন হ্যা বলো।
আচ্ছা ভাইয়ার আগের স্ত্রী কোথায় গেছেন।আমার স্বামি আমাকে বলে আমরা সবাই জানতাম ভাবি অনেক ভালো ছিলেন।
অনেক নম্র ভদ্র ছিলো সে।আমাদের সবার খেয়াল রাখতো।কিন্তু! কিন্তু বলেই আমার স্বামি চুপ।আমি বললাম তার পর কি হয়েছিলো।বিয়ের পর ভাবির একটা মেয়ে ও হয়।আমাদের বাড়িটা মাতিয়ে রাখতো সে।খুব সুন্দর কিউট বাচ্চা ছিলো।ওর নাম ছিলো রুমঝুম।
এত সুন্দর বাচ্চা রেখে ওর মা অন্য একজনের সাথে রিলেশন করে।ভাইয়ার সাথে মাঝে মাঝেই ঝগড়া হতো ভাবির।আমরা কিছু বললেই ভাইয়া বলতো ওর চরিত্র খারাপ।আমাকে আর আমার মেয়েকে রেখে অন্য পুরুষের সাথে ফোনে কথা বলে।
কিন্তু আমাদের বিশ্বাস হতো না।
তারপর হটাত একদিন ভাইয়া ভাবি আর রুমঝুম সমুদ্রে ঘুরতে যায়।সেখান থেকে রুমঝুম কে রেখে অন্য একটা ছেলের সাথে পালিয়ে যায় ভাবি।
ভাইয়া অনেক কান্নাকাটি করে তখন।ভাবিকে ভাইয়া অনেক ভালবাসতো।তার কিছুদিন পরে মেয়েকে সামলানোর জন্য ভাইয়া তিসা কে বিয়ে করে।তারপর রুমঝুম ও মারা যায়।
রুম ঝুম দিন দিন অসুস্থ হয়ে পড়ছিলো। অসুস্থ হওয়ার এক মাসের মাঝেই মেয়েটা মারা যায়।বলেই একটা দীর্ঘশ্বাস দেই আমার স্বামি।ওর হৃদয় ফেটে যাচ্ছে ছোট বাচ্চাটার জন্য সেটা বোঝাই যাচ্ছে।
সবাই ঘুমিয়ে গেছে নিঝুম রাত।আমার চোখে আজ চিন্তায় ঘুম নেই।বড় ভাবি নিজে থেকে পালিয়ে গেলে কেনো সে আত্মা দিয়ে তিসার ক্ষতি করার চেষ্টা করবে।
ভাবতে ভাবতে রাত ১২ টা আজ আবার সেই আহত শব্দ।খুব গম্ভীর ভাবে সে হেটে যাচ্ছে।আজ সবার ই ঘুম ভেঙে গেছে। সবাই ভয়ে থর থর করে কাঁপছে। কি হয়েছে আমার ভাসুরের সাথে সেটা শুধু সেই জানে।
বাড়ির পাশের বাগানে তাকে পাওয়া গেছে।কি কি করেছে ওই আত্মা ভাইয়ার সাথে সেটা ভাইয়ার থেকেই জানতে হবে।
আমার কাছে সব টা যেন কেমন আশ্চর্য লাগছে।আচ্ছা ওই আত্মাটা ঘুরে ঘুরে ভাইয়া আর ভাবির পিছনেই কেনো লাগছে।
এই বাড়ির আর কারো কোনো ক্ষতি ই সে করে নি।আগের দিন আমি একটি স্বপ্ন দেখছিলাম।স্বপ্ন বলে আমি গুরুত্ব দেই নি।
ওই কবর টার পাশে দাঁড়িয়ে আছে সাদা শাড়ি পরা ওই মহিলা।আমি জানালা ধরে দেখছিলাম তাকে।সে আমাকে ডাকছিলো।আমি সমস্ত ভয় উপেক্ষা করে তার কাছে যায়।
সে পিছন ঘুরে দাড়িয়ে থাকে।গম্ভীর গলায় বলে আমাকে সাহায্য করো তুমি।তোমার কোনো ক্ষতি করবো না আমি
আমি তাকে বলি কে আপনি? বলতেই সে পিছন ঘুরে দাড়ায় তার ওই বিভৎস চেহারা দেখেই আমি চিৎকার দি।তখন ই আমার স্বামি বলে কি হয়েছে তোমার।স্বপ্ন দেখছিলাম আমি সেটা ঘুম ভাঙার পরেই বুঝতে পারি।
আজ আমার মনে হচ্ছে আমাকে কিছু বলতে চাই ওই আত্মা।সব কিছুই রহস্যজনক। আমাকে খুজে বের করতে হবে এসব রহস্য।
হটাত তিসার মা বাবা কান্না করছেন।তাদের কান্নার আওয়াজ শুনে আমি এগিয়ে যায়।সেই পুতুল টা নিয়ে ওরা কাঁদছে।
আমি অবাক হলাম এই পুতুলের সাথে এদের কানেকশন টা কি?
পর্বঃ৪
———————————————————পুতুল টা দেখতে একদম জীবন্ত।যেন প্রাণ আছে এর ভিতরে।দেখলেই মনে হয় যেন এখনি কথা বলে উঠবে।
—স্টোর রুমে থেকেও পুতুল টার গায়ে কোনো ধুলা ময়লা পড়ে নি।পুতুল টা এমন অদ্ভুত দেখতে যে ওই পুতুল এর চোখের দিকে তাকিয়ে থাকলে মনে হয় যেন পুতুল টা তার দিকেই তাকিয়ে আছে।
এই পুতুল টাই তো আমি স্বপ্নে দেখেছিলাম।এই পুতুল কোনো সাধারণ পুতুল হতে পারে না।কারণ এই পুতুল রোজ রাতে চলতে পারে।
।
—রাত হলে এর মাঝে প্রাণের সৃষ্টি হয়।নিজে নিজে হাসে কাঁদে মানুষের সুরের মতো সুর তার।হ্যা সেদিন রাতেই তো দেখলাম এই পুতুল স্টোর রুম থেকে একা একা বেরিয়ে হেঁটে যাচ্ছে।
আমি কাউকে বলতে পারি নি সেটা।তিসার মা বাবার সাথে কিসের কানেকশন এই পুতুল এর উনারা কি চিনেন এই পুতুল।আমি একটু এগিয়ে গেলাম আন্টি আঙ্কেল এই পুতুল টা আমি বলা শেষ করতেই ওরা হুহু করে কেঁদে ওঠে।
—আমার হার্টবিট যেন আরো বেড়ে চলেছে কি নতুন কাহিনী শুনতে চলেছি আবার।উনারা বলেন এটা আমার নাতনী রুমঝুম এর পুতুল।আমরা কিনে দিয়েছিলাম।পুতুল ছাড়া একটা সেকেন্ড ও সে থাকতে পারতো না।আমার নাতনীর প্রাণ টা ছিলো এই পুতুলের মাঝে।
আমি বললাম রুমঝুম আপনার নাতনী মানে ভাইয়ার আগের স্ত্রীর মেয়ে তার পুতুল।তিসা বলে ওঠে।মা চুপ করো এসব আর তুলো না।ওদের কাঁন্না দেখে মনে হয় যেন ওদের আপন নাতনী ওরা যা করছে।আমি তখন ই বলে উঠি আপনারা কত ভালো আন্টি মেয়ের সতীনের মেয়েকে কত ভালবাসতেন।
—তখনি কাজের মেয়েটা বলে ওঠে সতীনের মেয়ে হলেও ওটাও উনার মেয়ে ছিলেন।
কথাটা শুনে যেন আমার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে।আমি উত্তেজিত হয়ে যায় আন্টি আপনার মেয়ে মানে দিশা আপু উনি কোথায়।শুনেছি কার সাথে যেন পালিয়ে গেছে।
—তখন তিসার মা বাবা বলেন হ্যা মা দিশার নাম আমরা মুখেও আনি না।যে মেয়েকে এত ভালবাসতাম সে আমাদের মান সম্মাণ এভাবে নষ্ট করবে ভাবতে পারি নি মা।ওর জন্য আজ আমাদের নাতনী কে হারিয়েছি।আমাদের কাছে ওই মেয়ে মৃত।
আমি বললাম কেনো আন্টি কি হয়েছিলো।তখন তিসার আম্মু বলে ওর বিয়ে আমরা সোহেল এর সাথে দিয়েছিলাম।তিসার স্বামির নাম ই সোহেল।মানে তিসার বিয়ে ওর বড় বোনের স্বামির সাথে হয়েছে
আমাকে কেউ এ কথা একবার ও বলে নি।আন্টি বড় জামাই এর সাথে তিসার বিয়ে দিলেন কেনো।
—তখন তিসার মা বাবা আবার বলেন আমার নাতনী টার জন্য দিয়েছিলাম।আমাদের বড় মেয়ে দিশা আমার নাতনী আর জামাই কে রেখে নিজের বয়ফ্রেন্ড এর সাথে পালিয়ে গেছে।যে মেয়ে বিয়ের আগে কারো সাথে কথাই বলতো না সে বিয়ের পরে এমন কাজ কি করে করলো।
তিসা এ বিয়েতে রাজি ছিলো না। জামাই এর অনুরোধে আমরা অনেক কষ্টে তিসা কে এ বিয়েতে রাজি করাই।
কিন্তু যে নাতনীর জন্য তিসার বিয়ে দিলাম সে নাতনী কেও বাঁচাতে পারলাম না।
—অসুস্থ হতে হতে এক সময় ও মারা গেলো।
গল্প টা শুনতে শুনতে আমার ভাসুরের চিৎকার শুনতে পাই।ও আমাকে মেরে ফেলবে। আমরা বলি কে?
তখন উনি বলেন রুমঝুম এর পুতুল টুসি।রুমঝুম এর পুতুল টুসি আপনাকে কেনো মারবে ভাইয়া?একটা পুতুল কি কাউকে মারতে মারে।
আমার ভাসুর অস্বাভাবিক আচরণ করছেন।উনি বলছেন কাল রাতে রুমঝুম এর পুতুল আমার গলা টিপে ধরেছিলো।ওই পুতুল সাধারণ পুতুল না।
ওই পুতুল আমাকে মেরে ফেলবে।কাল রাতে ওই পুতুল আমাকে টানতে টানতে পাশের বাগানের কবরের কাছে নিয়ে গেছিলো।
এ বাড়ির বর্তমান যা অবস্হা তাতে সবাই সব কিছু বিশ্বাস করতে বাধ্য।ভাসুরের রুম থেকে এসে বাড়ির সবাই চিন্তা করছে।
রুমঝুম তো অসুখে মারা গেছে তাহলে ওর আত্মা কেনো ঘুরাঘুরি করছে। নিজের বাবাকে কেনো মারতে চাচ্ছে ও।অস্বাভাবিক ভাবে মৃত্যু না হলে কোনো আত্মা বা কোনো কবর অতৃপ্ত হয় না।
আমরা সবাই এটা জানি অপমৃত্যু আত্মা ছাড়া কোনো আত্মাই ঘোরাঘুরি করেনা।
নিশ্চয় এমন কিছু হয়েছিলো রুমঝুম এর সাথে তাই ওর পুতুল এর মাঝে ওর আত্মা ভর করে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
কিন্তু এ বাড়ির সবাই রুমঝুম কে খুব ভালবাসে।এ বাড়ির কেউ রুমঝুমের ক্ষতির কথা ভাবতেও পারে না।তাহলে কি হতে পারে। কিছু তো একটা গড়বর আছেই।যেটা সবার অজানা রয়ে গেছে।
হটাত ই একটি ডায়রির পাতা উড়ে এলো উপর থেকেই পড়লো ডায়রির পাতাটা।
ওই পৃষ্টা তে লেখা আছে এমন,,মা বাবা তোমরা সবাই জানো আমি অনেক খুশি।কিন্তু আমি সুখে নেই।রোজ মৃত্যুর ভয় আমাকে তাড়া করে বেড়ায়।আপনজন যখন মৃত্যুর হুমকি দেই তখন সে কথা পৃথিবীর কাউকে বলা যায় না।হয়তো যে কোনো মুহুর্তে আমাকে হারিয়ে ফেলবে।আমার মৃত্যুর কারণ টা আমি কাউকেই বলতে পারবো না।মা বাবা হয়ে যখন নিজের মেয়ে সম্পর্কে এ সব জানবে তোমরা স্টোক করে মারা যাবে।আমি কাউকে এ কথা বলতে পারি না।তাই রোজ ডায়রি তে একটা করে পাতা লিখি আর ছিড়ে ফেলি।তোমাদের কথা শুনে বিয়ে করেছিলাম।আমি যাকে ভালবেসে বিয়ে করেছি সে আমাকে ভালবাসে নি মা।আমি ঠকেছি। আমার কান্না তোমাদের কাছে পৌছাবে না মা কোনোদিন।আমার একটাই কষ্ট আমার কিছু হলে আমার মেয়েটার কি হবে।
ডায়রির একটা পাতাতে এগুলা লেখা দেখে আমি আরেকবার চমকে যায়।এটা কার লেখা হতে পারে।আমি বাড়ির সবাইকে দেখায় কেউ চিনতে পারে না সে হাতের লেখা।
তিসার মা বাবা চিনে ফেলেন হাতের লেখাটা। উনারা বলেন এটা তো দিশার হাতের লেখা।কিন্ত দিশা এসব কেনো লিখেছে।ও তো অন্য কারো সাথে পালিয়ে গেছে।
আমি তখন তিসার মা বাবাকে বলি আচ্ছা পালিয়ে গেছে যার সাথে তাকে আপনারা চিনেন।তিসার মা বাবা বলেন না আমরা চিনি না।তাহলে দেখেছেন কখনো সেই ছেলেকে।কোথায় তার বাসা। সে কে?
আর পালিয়ে গেলেও কোনদিন সে আপনাদের সাথে দেখা করে নি কেনো?
একটা ফোন ও কি করে নি ওর মেয়ের জন্য?
পর্বঃ৫_ও_শেষ
––––––———————
একটা জীবীত মানুষ কি কখনো আত্মা হতে পারে?আর সাধারণ মানুষের পক্ষে তো কখনো আত্মার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব না।
আর আত্মারা কখনো অন্যর কথা শুনে চলে না যে কেউ তাদের পরিচালনা করবে।তাছাড়া আত্মারা পৈচাশিক হলেও তারাও আগে মানুষ ছিলো নিজের আপনজন দের মৃত্যুর পর কোনো আত্মা প্রাণ কেড়ে নিতে পারে না।
আর সব থেকে বড় কথা কোনো মেয়ে মারা যাবার পরে কখনো তার বাবার ক্ষতি করতে পারে না।
আমার কথা গুলো শুনে তিসার মা বাবা বলেন তাহলে কেনো আমার মেয়ে জামাই এর সাথে এসব হচ্ছে মা।তখন আমি বলি শোনেন আন্টি আঙ্কেল দিশা আপু যদি পালিয়েই যাবে তাহলে অন্তত একটা দিন সে আপনাদের খোজ নিতো।
নিজের মেয়ের খোজ নিতো।আপমাদের কি সন্দেহ জাগে নি যে কেনো কোনোদিন তার কোনো হদিস আপনারা পান নি।আর আজ এই ডায়রিটা পড়ে তো এটা পরিস্কার বোঝা যাচ্ছে দিশা আপুর সাথে খারাপ কিছু হতে যাচ্ছিলো।
নিজেদের মাঝের কেউ উনার প্রাণ নেওয়ার চেষ্টা করছিলো।একটা মেয়ে কতটা ভালো আর উদার হলে এত কষ্টের কথা কাউকে জানাই নি।এমন কি আপনাদের ও না।আর আপনারা গভীর ভাবে কোনোদিন কিছু ভাবলেন না।
আপনাদের যে মেয়ে বিয়ের আগে কোনো ছেলের সাথে মিশতো না বিয়ের পর হুট করে নিরুদ্দেশ হলো আর আপনারা ভেবে নিলেন কারো সাথে পালিয়ে গেছে।এমন তো হতে পারে নিজের প্রাণের ভয়ে পালিয়ে গেছে সে।বা কোথাও লুকিয়ে আছে সে।বা কেউ তাকে মেরে ফেলেছে।
তিসার মা বাবা কথা গুলো শুনে গভীর চিন্তায় পড়ে গেলেন।হুম তাইতো আমরা তো এত কিছু ভাবি নি।আসলে নাতনী টা মারা যাবার জন্য আমাদের ওর উপর রাগ টা আরো বেড়ে যায়। ও যদি কোথাও না যেত নাতনী টা মরতো না।
আমি বললাম আচ্ছা আন্টি ওদের তিনজনের কি আর কোনো রহস্য আছে আমাকে খুলে বলেন তো।তিসা তো এমনি।মারা যাবে দেখি তার আগে কিছু করা যায় কিনা।তখন তিসার মা বলে আমরা জামাই এর সাথে দিশার বিয়ে ঠিক করি।দুই পরিবারের সম্মতিতে বিয়ের দিন তারিখ ঠিক হয়।বিয়ের ছয় মাস আগেই ওদের বিয়ে ঠিক হয়।
তিসা দিশা জামাই মাঝে মাঝেই ঘুরতে যেত।দিশা কখনো কোনো ছেলের সাথে কথা বলতো না।শুধু জামাই এর সাথেই কথা বলতো।আত্মীয়স্বজন৷ সবাই কে দাওয়াত দেওয়া হয়ে গেছে।তার মাঝে জামাই বলে সে দিশা নয় তিসা কে বিয়ে করতে চাই মানে জামাই তিসা কে ভালবেসে ফেলেছে।
এইদিকে তিসা ও রাজি বোনের জামাই এর সাথে বিয়ে করতে।দিশা এসব এর কিছুই জানতো না।ও অনেক সরল মনের ছিলো।জামাই আর তিসার মাঝে কবে কবে গভীর সম্পর্ক গড়ে উঠেছে আমরা কেউ বুঝতেই পারি নি।বিয়ের সাত দিন আগে যদি বলা হয় যে এ বিয়ে সম্ভব না তখন কি সেটা সম্ভব।আর তখন ওই বিয়ে ভেঙে দিলে দিশা আত্মহত্যা করতো।
তিসার সাথে জামাই এর যে অবৈধ সম্পর্ক হয়েছে সেটা আমরা জানতে পারিনি।তিসা আর জামাই এর ফোনে কথা শুনে একদিন আমরা সেটা জানতে পারি।
এক মেয়ের জন্য আরেক মেয়ের জীবন নষ্ট করবো না বলে আমরা সিদ্ধান্ত নেই যে এই বিয়ে টোটাল ই ভেঙে দিবো।ঠিক তখন ই তিসা আর জামাই দুজন ই আমাদের কাছে ক্ষমা চাই।আর জামাই বলে আবেগে আমি ভুল করেছি আমি দিশাকে ভালবাসি।তখন আমরা দিসা আর জামাই এর বিয়ে দি।
বিয়ের পর তিসা আর জামাই আর কখনো মেলামেশা করে নি।বোনের জামাই হিসাবেই দেখেছে।কোনো অশান্তি বা ঝামেলা আর আমরা পাই নি।সব কিছু নরমাল হয়ে গেলো।কিন্তু হটাত ই বিয়ে ৪ বছর পর জামাই দিশার নামে নালিশ দিতে থাকে যে দিশা নাকি অন্য কোথাও সম্পর্ক করেছে।এই নিয়ে কিছুদিন অশান্তি হওয়ার পর ই দিশা পালিয়ে যায়।আমরাও আর রাগে খোজ খবর নেই নি।
আমার মনের সন্দেহ আরো বেড়ে গেলো।আমি এটাই ভাবছিলাম কিছু একটা শত্রুতা তো আছেই নইলে কেউ কারো ক্ষতি কেনো করবে।তবে সব ই বুঝলাম ওই কবরের কাহিণি কি হতে পারে। আর আমার কাছেই বা সাহায্য চাইছে কেনো? এইদিকে রুমঝুম এর পুতুল টুসি ই বা এমন করছে কেনো?
আজ রাতে আমি ঘুমালাম না বাড়ির বাকিরাও আতঙ্কে আছে।আমার ভাসুর আর তিসা দুজন ই অসুস্থ। আমি আমার অজান্তেই ঘুমিয়ে গেলাম।আজ সেই অস্পষ্ট মুখটা আমি স্পষ্ট দেখলাম।একি দিশা আপু আপনি?আপনি সেই মহিলা যার ভয়ে এ বাড়ির মানুষ আতঙ্কে আছে।আর আপনি কেনোই বা সবার ক্ষতি করছেন।যে বাড়ির সবাই কে ভয় দেখিয়ে বেড়ায় সে আজ হুহু করে কাঁদছে।আমি বললাম কি হয়েছে আপনার খুলে বলুন।কেনো নিজের বোনের ক্ষতি করছেন।
তখন দিশা আপুর আত্মা বলে,, ওরা আমাকে বাঁচতে দেই নি।আমাকে নির্মম ভাবে আমার বোন নিজের আর স্বামি নিজের হাতে মেরেছে।আমাকে মারার পরে আমার মেয়েকে তিসা রোজ একটু করে বিষাক্ত পয়জন দিতো যা খেয়ে খেয়ে আমার রুমঝুম ধীরে ধীরে মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়ে। আর ওর আত্মাটা ওই পুতুলের মাঝে ঢুকে যায়।আমার মেয়ে ১৪ তারিখ মারা যায় তাই প্রতি মাসের ১৪ তারিখ আমি ভয়ংকর হয়ে উঠি।আমাকে নিয়ে ঘুরতে যাবার নাম করে আমাকে সমুদ্রে ডুবিয়ে মারে ওরা আমার লাশ ট্রলি ব্যাগে ভরে বাড়িতে এনে ওই বাগানে রাতের আধারে পুতে রাখে।
আমাকে সরানোর জন্য মিথ্যা অপবাদ দিয়ে রোজ আমাকে খুব মারতো।আমার চোখের সামনে আমার বোন আর আমার স্বামি আমাকে আর আমার মেয়েকে মেরে ফেলার হুমকি দিতো।
আমাকে মেরে ফেলে আমার চরিত্রে বদনাম করে ওরা।আমি চুপ ছিলাম।আমার মেয়ের সাথে হওয়া অন্যায় দেখে আমার অতৃপ্ত আত্মা আর চুপ থাকতে পারে নি।
আমার লেখা ডায়রি ওরা আমার কবরে পুতে রেখেছে। আমি চাই সারা দুনিয়ার মানুষ জেনে যাক আমার আর আমার মেয়ের সাথে হওয়া অন্যায়।
আমার ঘুম ভাঙার সাথেই দেখি ফজরের আজান দিচ্ছে। সকাল হলেই আমি সবাই কে ডেকে বলি দিশা আপুর কবর ওই বাগানেই আছে।কেউ বিশ্বাস করে না আমর কথা।
পুলিশ কে খবর দিয়ে ওই বাগানের কবর খোড়ায় ব্যবস্থা করি।কবর খুড়ে দেখি দিশা আপুর লাশ পচে নি।মনে হচ্ছে কিছু সময় আগেই রাখা হয়েছে।পাশেই সেই ডায়রি টা রাখা।
ডায়রিতে লেখা,,আমার বোন আমার চোখের আড়ালে আমার স্বামির সাথে মেলামেশা করে।এটা আমি লক্ষ করলে ওদের বকা দিলে ওরা প্রকাশ্য আমার সামনে মেলামেশা করে।আমি কিছু বললে আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দেই।পৃথিবীতে এমন বোন যেন কোনো মেয়েই না পাই।আমাকে হয়তো ওরা মেরে ফেলবে আমার মৃত্যুর জন্য ওরাই দায়ী।
তিসার মা বাবা কতটা কষ্ট পেয়েছেন ডায়রিটা পড়ে তাদের ওই অসহায় মুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছে।একটা মেয়ে কিভাবে প্রতারিত হয়েছে নিজের বোন আর স্বামির কাছ থেকে সেটা যেন দুনিয়াতে আর কারো সাথে না ঘটে।
তিসা মারা যায়।তিসার স্বামি পাগল হয়ে গেছে।নিজেই পুলিশের কাছে সব স্বিকার করেছে।ওই লাশ টা হয়তো এবার পঁচতে শুরু করবে।ওই অতৃপ্ত কবর টা এবার তৃপ্তি পেয়েছে।
নিজের সাথে হওয়া অন্যায় সবাই কে জানাতে পেরে।
লেখাঃমৌসুমি
No comments