মৃত মামীর ভয়ে আত্নহত্যা সত্য ভুতের গল্প Bhuter Golpo
মৃত মামীর ভয়ে আত্নহত্যা
Bhuter Golpo সত্য ভুতের গল্প
সকাল অনুমানিক ৯টার দিকে কল এলো,"মুহিবের মামী মারা গেছে কিছুক্ষণ আগে"মুহিব এবং তার মা-বাবা তারাতারি করে তাদের গ্রামের বাড়িতে রওনা দিলো।পথে তেমন জ্যাম ছিলো না বলে ১.৫-২ ঘন্টার মধ্যেই তারা চাঁদপুর সদর তাদের গ্রামের বাড়িতে পৌছে গেলো...
বাড়ির উঠানে পৌছতেই তাদের পায়ের নিচে মাটি যেনো সরে গেলো!তারা দেখলো মুহিবের মামীর মৃত দেহ পরে আছে উঠানের একদম মাঝ বরাবর একটা চাদরের উপর শোয়ানো। তবে কোনো সাধারণ মৃত্যু নয়।সে আত্নহত্যা করেছে।
মুহিব কিউরিসিটি নিয়ে একটু কাছে গিয়ে দেখলো তার মামীর গলায় রক্তজমাট মোটা একটা দাগ এবং জিহ্বাটা বেরিয়ে আছে তার মুখ থেকে একদম কুচ কুচে কালো অবস্থায়।
মুহিব তার মামীর এমন অবস্থা দেখে ভয়ে পিছনে সরে আসে যেহেতু সে তখন ক্লাস সিক্সে পাড়তো তাই হয়তো ভয়টা একটু বেশিই পেয়েছিলো!
শোনা যাচ্ছিলো দীর্ঘ দিন ধরেই নাকি তার মামার সাথে ছোট-খাটো সাংসারিক বিষয় নিয়ে তাদের ঝগড়া লেগেই থাকতো কিন্তু কালকে কাউকে কিছু না বলেই সে এই কাজটা করে ফেলে!তার মামীর এইরকম অপমৃত্যুতে সারা বাড়িতে একটা গোমটা পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
পরে অনেক পুলিশি জটিলতার পর বাদআসরের সময় তার মামীর দাফন কাজ সম্পূর্ন হয়।সেখান থেকে আসতে আসতে মাগরিব পেরিয়ে যায় তাদের।বাসার উঠানে আসতেই মুহিব একটা বিকট চিৎকার দিয়ে অজ্ঞান হয়ে মাটিতে পরে যায়!
তার বাবা তাকে ঘরের ভিতরে নিয়ে যায় এবং মাথায় পানি ঢালতে থাকে একপর্যায়ে তার জ্ঞান ফিরলে সবাই উৎসুক দৃষ্টিতে তার দিকে তাকায় এবং যানতে চায় যে সে কি দেখেছে?
সে তখন বললো....
▪️আমি দেখলাম মামী সশরীরে তার ঘর থেকে বের হচ্ছে এবং তার মুখ থেকে কালো লম্বা একটা জিহ্বা বের হয়ে ছিলো আর সে রাগ্নানিত দৃষ্টিতে আমাকে তার দিকে ডাকছে!!
মুহিবের মুখ থেকে এইসব অদ্ভুতূরে কথা শুনে তার নানা পাশের মসজিদ থেকে হুজুরকে নিয়ে আসে এবং হুজুর এসে মুহিবকে দোয়া-কালাম পড়ে ফুঁ দেয় আর পরাপানি দিয়ে যায় এবং বলে তিন রাত পর্যন্ত ঘরের লাইট বন্ধ করবেননা রাতেরবেলা শোয়ার সময়।
মুহিবকে তার কয়েকজন কাজিনের সাথে ঘুম পারিয়ে দেওয়া হলো।রাত তখন আনুমানিক দেড়টা-দুইটা পাশের রুম থেকে রিয়াদের (কাজিন) চিৎকার শুনতে পেলো সবাই,আর তেমনিই দৌড় দিয়ে দেখতে গেলো সেখানে কি হচ্ছে।তারা গিয়ে দেখলো রিয়াদ বিছানার পাশে আতংকিত অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে আর বিছানায় মুহিব চোখ বন্ধ করে বসে আছে আর নিজের গলা নিজেই চাপছে।যেনো তার উপরে কোনো জ্বীন ভর করে তাকে মারতে চাচ্ছে।তার মামা আর বাবা অনেক চেষ্টার পর তার গলা থেকে তার হাত আলাদা করে এবং তাৎক্ষণাত সে অজ্ঞান হয়ে পরে।পরবর্তীতে তার জ্ঞান ফিরলে সে বলে...
▪️আমি সপ্নে মামীকে দেখলাম সে জানালা দিয়ে ভিতরে ঢুকলো এবং আমার বুকের উপড়ে বসে আমার গলা টিপে আমাকে মারতে চেয়েছিলো!!
মুহিবের বাবা-মা এবং উপস্থিত কেউই বুঝছিলো না কেনো শুধু তার সাথেই এমন হচ্ছে। তাই তখন আরেকবার হুজুর ডাকা হলো!
মুহিবের নানা তখন রাত দুইটা বাজেই মসজিদ থেকে হুজুর নিয়ে আসলেন তার নাতির এইরকম অদ্ভুতকান্ড দেখে!কিছুক্ষণ পর হুজুর আসলেন এবং তিনি আবারো অনেক দোয়া-কালাম পরে মুহিবকে ফুঁ দেয় আর এইবার তিনি মুহিবকে একটা তাবিজ দিয়ে যায় আর বলে....
▪️সব সময় কাছে রাখবে,যদি কোনোদিন হারায় যায় তবে এইসব ভুতূরে কান্ড কিন্তু আবার শুরু হবে তোমার সাথে!
২-৩দিন পর তারা গ্রাম থেকে ঢাকায় চলে আসে এবং তারপর অনেক বছর চলে যায় কিন্তু মুহিবের কোনো ক্ষতি হয়নি।মুহিব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স না পেলেও সে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পায়!এবং এতে তার খুশি আরো বেড়ে যায় কারন নিজ এলাকা থেকে দূরে পড়া-লেখা করার ইচ্ছা ছিলো তার অনেকদিনের....
এইভাবে সে রাজশাহীতে চলে যায় এবং সেখানকার হলে থাকা শুরু করে।প্রথম দুইমাস ভালোই চলছিলো তার।তারপর একদিন বাহির থেকে হলে এসে সে তুলকালাম কান্ড করতে থাকে!তার রুম মেট নিয়াজ কি হয়েছে জ্ঞিগেস করলে সে বলে.."আমার তাবিজটা পাচ্ছিনা!ওইটা খুবই গুরুত্বপূর্ন তাবিজ ছিলো"
তারপর অনেক খোঁজাখুঁজি করেও আর তাবিজটা পাওয়া যায়নি এবং মুহিবও বেশি একটা গুরুত্ব দেয়নি আর....কয়েকদিন পরের ঘটনা!মুহিব ওয়াশরুমে ছিলো এবং তার রুমমেটরা বেডরুমে ছিলো হঠাৎ সে একটা আত্নচিৎকারে রুম থেকে বের হয় এবং হাউমাউ করতে থাকে!পরে তার রুমমেটরা তাকে শান্ত করে এবং কি হয়েছে জানতে চায়,তখন সে বলে...
▪️আমি যখন গোসল করছিলাম তখন দেখলাম বন্ধ দরজার ভিতর দিয়েই মামী ওয়াশরুমে ঢুকলে এবং সাথে সাথে তার হাতটা লম্বা করে আমার পিঠের মধ্যে একটা জোড়ে থাপ্পড় দিলো!
সবাই মুহিবের কথা শুনে ওর পিঠে চেক করতেই একটা রক্তজমা হাতের চিহ্ন দেখলো যা কোনো সাধারণ মানুষের পক্ষে মারা সম্ভব না!এরপর একে একে তার সাথে আরো অনেক ঘটনা ঘটতে থাকে যেমন:খেতে বসলে খাবারসহ প্লেট ফেলে দেওয়া,রাতেরবেলা চড়,থাপ্পড় মারা,গলা টিপে ধরা আরো কত কি!এছাড়াও তার মামীর আত্না নাকি তার বন্ধুদের উপরেও আছর করে তাকে ভয় দেখাতো!
এগুলা দেখতে দেখতে সে একদমই হতাসাগ্রস্থ হয়ে পরে এবং ডিপ্রেশনে চলে যায় এবং একপর্যায়ে সে সুইসাইড করে ফেলে কাউকে কিছু না বলে!!
শেষ
No comments